ঢাকাতেই হবে এসিসির সভা

ঢাকাতেই হবে এসিসির সভা

সকল জল্পনা-কল্পনা উড়িয়ে ঢাকাতেই হচ্ছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ২৪ ২৫ জুলাই রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে বসবে এই বৈঠক। এতে অংশ নিতে এসিসির চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি হাজির হয়েছেন ঢাকায়। ফরে উবে গেছে ঢাকায় এসিসি সভা নিয়ে তৈরি হওয়া শঙ্কা।

বৃহস্পতিবার এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বার্ষিক সাধারণ সভা। যদিও নানা দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তায় সম্ভাব্য কোরাম সঙ্কটের কারণে সভা পিছিয়ে যাওয়ার নানা গুঞ্জনও ছিল। শেষ পর্যন্ত সভা হচ্ছে বলেই জানিয়েছে বিসিবি। বুধবার হবে প্রধান নির্বাহীদের বৈঠক। পরদিন এসিসির বার্ষিক সাধারণ সভা। বাংলাদেশ বা বিসিবি এই সভার আয়োজক হলো প্রথমবার। ভারতের প্রতিনিধি সরাসরি বৈঠকে না আসলেও কিছু কিছু গণমাধ্যম জানিয়েছে, তারা ভার্চুয়ালি যুক্ত হতে পারেন! সবমিলিয়ে এসিসির ২৫টি সদস্যদেশের মধ্যে ১৬-১৭টি দেশ এই সভায় অংশ নিতে যাচ্ছে।

ইতোমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এই সভার জন্য সবধরনের প্রস্তুতি শেষ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এসিসি সভা নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে গেছে উল্লেখ করে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, ‘এসিসির বিষয়টি আমি পরিষ্কার করে দিচ্ছি। এসিসি একটি সংগঠন যেখানে এশিয়ার পাঁচটি পূর্ণ সদস্য এবং ২৫টি সহযোগী সদস্য দেশ রয়েছে। এসিসি থেকে আমাদের কাছে এজিএম আয়োজন করার একটি প্রস্তাব এসেছিল। আমরা আয়োজক হিসেবে সম্মতি জানিয়েছি। এসিসির এই অনুষ্ঠানে আমরা শুধুমাত্র লজিস্টিক সাপোর্ট দিচ্ছি।

এসিসির সভায় আসন্ন এশিয়া কাপ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন, এই ব্যাপারে তাদের বলার কিছু নেই। তারা কেবলমাত্র আয়োজকের ভূমিকায় রয়েছে, ‘বিসিবি এখানে শুধুমাত্র আয়োজক। আমরা এসিসির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। কারা আসছে বা আসছে না, তাদের কখন বিমানবন্দর থেকে আনতে হবে, হোটেলে বুকিং দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ে আমরা লজিস্টিক সাপোর্ট দিচ্ছি। এর বাইরে আমাদের আর কোনও কাজ নেই।

এই সভাতে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বাড়ানো নিয়েও আলোচনার পরিকল্পনা আছে বিসিবি সভাপতির। গণমাধ্যমকে বুলবুল বলেছেন, ‘পাকিস্তানের বোর্ড চেয়ারম্যান এখন এসিসিরও প্রধান। তিনি এসিসির অনুষ্ঠানেই আসছেন। এর মাঝে যদি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বাড়ানো বা ক্রিকেট নিয়ে অন্য কোনও আলোচনার সুযোগ থাকে, সেই চেষ্টা করা হবে।

এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বর্তমান প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। তবে তার অধীনে এসিসির কার্যক্রম যেন আরও সংকুচিত হয়ে পড়েছে, বিশেষ করে ভারতীয় বোর্ডের দৃষ্টিভঙ্গিতে। ভারত বরাবরই এসিসিকে খুব একটা গুরুত্ব দেয় না। আর নাকভি দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই উদাসীনতা যেন আরও স্পষ্ট হয়েছে। দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েন তো আগে থেকেই চরমে, তার প্রভাব এবার ক্রিকেট প্রশাসনেও পড়েছে। গত এপ্রিলে কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে পড়ে। একইসঙ্গে চাপে পড়েছে দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের মধ্যকার যোগাযোগ। ফলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন কিংবা কোনও যৌথ পরিকল্পনার সম্ভাবনা কার্যত শূন্যে এসে ঠেকেছে।

 

শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এখনও পর্যন্ত সভায় কোনও প্রতিনিধি পাঠাবে কি না, তা নিশ্চিত করেনি। ফলে আইসিসির পূর্ণ সদস্য এশিয়ার পাঁচ দেশের মধ্যে তিনটি যদি অনুপস্থিত থাকে, তাহলে এই সভার কার্যকারিতা গুরুত্ব নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠছে। যদিও পিসিবি বিসিবি মিলে আফগান বোর্ডকে রাজি করাতে চেষ্টা করছে। লঙ্কান বোর্ডের কোনও প্রতিনিধিকেও অনলাইনে রাখার চেষ্টা চলছে। সবকিছু নিশ্চিত হবে আজকের মধ্যেই। তবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিনিধি না থাকা মানে এশিয়া কাপ নিয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে না এখানে।

এই অঞ্চলের ক্রিকেট রাজনীতির সমীকরণে বাংলাদেশ বিপাকে পড়তে পারে কিনা এমন প্রশ্নে বুলবুল বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না (সমস্যা হবে) ক্রিকেট সবার ওপরে। এই ধরনের সমস্যা হবে না বলেই মনে হয়। আমি আবারও বলছি, আমরা কেবলই আয়োজক। আগে কখনও আমরা এজিএম হোস্ট করিনি। বোর্ডের সবাই মিলে, দেশের সবাই মিলে আমরা চেষ্টা করবো যেন ভালো একটা এজিএম হয়।

সহযোগী দেশগুলোকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানাতে পেরে দারুণ উচ্ছ্বসিত বুলবুল, ‘আমাদের জন্য এটা ভালো বিষয় যে বিভিন্ন সহযোগী দেশগুলি আমাদের এখানে আসছে। আগে আমরা যেমন পূর্ণ সদস্য দেশগুলোকে বড় ভাই হিসেবে দেখতাম, এখন তারা আমাদেরকে সেভাবে দেখছে। আমাদের যে ক্রিকেট সংস্কৃতি আছে, আমরা চেষ্টা করবো সেটা তুলে ধরতে। ওদের সামনে আমরা এখানে পাকিস্তানের সঙ্গে সিরিজ জিতেছি, ওরাও দেখবে আমরা কত শক্তিশালী ক্রিকেট জাতি।