চবি সাংবাদিকতা বিভাগের এক প্রাণোচ্ছল সকাল

চবি সাংবাদিকতা বিভাগের এক প্রাণোচ্ছল সকাল

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অনুষ্ঠিত হলো ৩১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠান। মঙ্গলবার সকালে সমবেত কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত এই বরণ-অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় প্রাণের উৎসবে। নতুন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়, যা সবার মধ্যে এক আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে।


সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রওশন আখতার তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে নবাগত শিক্ষার্থীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “এই বিভাগ শুধু একটি একাডেমিক ক্ষেত্র নয়, এটি একটি দৃষ্টিভঙ্গি, একটি দায়বদ্ধতা, একটি দায়িত্বের জায়গা। তোমরা যারা আজ এখানে উপস্থিত, তোমরাই আগামী দিনের সমাজ সচেতন নাগরিক ও তথ্যযোদ্ধা হিসেবে দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে শক্তিশালী করতে পারো।”


তিনি আরও বলেন, “তোমাদের এই যাত্রা শুরু হচ্ছে চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অন্যতম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বুকে, তার মধ্যে আবার এমন একটি বিভাগে, যার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও সক্রিয় অ্যালামনাই নেটওয়ার্ক রয়েছে। এই সুযোগকে জীবনের শ্রেষ্ঠ সুযোগ হিসেবে কাজে লাগাতে হবে।”

বিভাগের শিক্ষকরা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। তারা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বাস্তব জীবনের যোগাযোগ দক্ষতা, নৈতিক সাংবাদিকতা এবং তথ্য বিশ্লেষণের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তাঁরা নবীনদের বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের শুরুতেই একটি ইতিবাচক ও দায়িত্বশীল দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার আহ্বান জানান।


বরণ অনুষ্ঠানে বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থীরাও নবীনদের অভিনন্দন জানিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। 


আয়োজনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল নবীন শিক্ষার্থীদের সরাসরি অনুভূতি প্রকাশ। নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে ৩১তম ব্যাচের এক নবীন শিক্ষার্থী বলেন, “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মর্যাদাসম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠানে, আবার তাও সাংবাদিকতা বিভাগের মতো গৌরবময় বিভাগে সুযোগ পাওয়াটা আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। এটা শুধু স্বপ্ন পূরণ নয়, এটি দায়িত্বেরও শুরু।”


আরেক শিক্ষার্থী আবেগময় কণ্ঠে বলেন, “আমরা খুবই গর্বিত যে আমরা এমন একটি বিভাগে পড়ার সুযোগ পেয়েছি যেখানে স্বাধীন চিন্তার চর্চা হয়, সত্যের পক্ষে কথা বলার শিক্ষা দেওয়া হয়, এবং আমাদের ভবিষ্যতের জন্য এক শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করা হয়।”


অনুষ্ঠানে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কন্ঠে মনমুগ্ধকর গান ও  পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে নবীনদের সৃজনশীলতা ও উৎসাহের প্রকাশ ঘটে। পরিবেশ ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ, উষ্ণ এবং উৎসবমুখর।


আলোচনা শেষে শিক্ষকদের সঙ্গে নবীনদের সরাসরি মতবিনিময়ের সুযোগ করে দেওয়া হয়, যেখানে তারা প্রশ্ন করে তাদের ভবিষ্যৎ শিক্ষা ও ক্যারিয়ার সম্পর্কে দিকনির্দেশনা পান।


সব মিলিয়ে ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানটি শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, বরং এটি ছিল একটি আত্মিক মিলনমেলা—যেখানে নতুনদের স্বপ্ন, প্রবীণদের অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষকদের ভালোবাসা একসাথে মিশে গড়ে তোলে একটি মানবিক ও শিক্ষনীয় পরিবেশ।