জাতীয় পার্টি নেতা পরিচয় দানকারী মাসরুর মাওলার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়
স্টাফ রিপোর্টার: বিভিন্ন সময় এরশাদ এবং জাতীয় পার্টির কাছের মানুষ কখনো কেন্দ্রীয় নেতা আবার কখনো আন্তজার্তিক উপদেষ্টা পরিচয় দেয়া মাসরুর মাওলাকে প্রতারক বলে অভিযুক্ত করেছেন তার আপন চাচা। বিভিন্ন সংস্থায় তার বিরুদ্ধে পাঠানো চিঠি সবুজ বাংলাদেশের হাতে এসে পৌছেছে। চিঠিতে মাসরুরের বিরুদ্ধে অঅভিযোগ করা হয়েছে সুবিধার জন্য সে নিজের নামও পালটে ফেলেছে। চিঠিটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
'একজন ভন্ড, টাউট, প্রতারক
মাসরুর মাওলা (স্বপন) কে চিনে রাখুন
বর্তমান মাসরুর মাওলা (স্বপন) এর জন্মদাতা পিতার দেওয়া নাম ছিল স্বপন মিয়া সে এটাকে পরিবর্তন করে মাসরুর মাওলা রেখেছে। তার প্রকৃত জন্মদাতা পিতার নাম মরহুম আবুল মাসুদ ওরফে মাইদুল ইসলাম, গ্রাম: পার্ববর্তীপুর, পো: রহমতপুর, থানা ও জেলা: গাইবান্ধা। এলাকার লোকেরা তাকে মাইদুল ইসলাম বলে জানতো। মাইদুল ইসলাম আমার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা। মাইদুল ইসলামের ছোট ভাইয়ের নাম আবুল মাজেদ ওরফে খাদেমুল ইসলাম। মাইদুল ইসলাম ঢাকায় গলায় টনসিল অপারেশন করায় তা ইনফেকশন হয়, এবং পরবর্তীতে ইনফেকশন কারনে মৃত্যুবরন করেন। আমি তখন অনেক ছোট। স্বপন আরো ছোট। মাইদুল ইসলামের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী অর্থাৎ স্বপনের মা মারা যান। তিন ভাই যথা মিলন, জাকির এবং স্বপন দুই বোন মমতাজ ও শিল্পী বেগম অর্থ্যাৎ ৫ জন ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে রেখে তার পিতা মাতা ইন্তেকাল করলে পুরো পরিবারে বিষাদের ছায়া নেমে আসে। আমার পিতা অর্থাৎ স্বপনের দাদা অনেক পূর্বেই ইন্তেকাল করেছেন।
আমার অপর জ্যৈষ্ঠ ভ্রাতা খাদেমুল ইসলাম পুরো পবিারের দায়িত্বভার কাধে নেয় এভাবে চলতে থাকা অবস্থায় আমার আত্মীয় মজনু ভাই (ঢাকায় বসবাসরত) স্বপন এবং শিল্পীকে লালন পালনের দায়িত্বভার নিতে চাইলে, আমার ভাই খাদেমুল ইসলাম শুধু স্বপনকে নিতে বলেন তখন স্বপনের বয়স সম্ভবত ৮-১০ বৎসর। স্বপনের অপর দুই ভাই গাইবান্ধা থাকা অবস্থায় মারা যায়। স্বপনের অপর দুই বোনকে বড় ভাই দেখাশুনা লালন-পালন ও বিয়ে সাধী দেয়। ১৯৮৪ সাল এর পর থেকে আমি ঢাকায় লেখাপড়ার সুবাদে স্বপনের সাথে প্রায়ই দেখা হতো।
১৯৯৮ সালে আমি ১০০% রপ্তানী মুখি গার্মেন্টস ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ি। অনেক সফলতা অর্জন করি। গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে Knit Composit Mill গড়ে তুলি। বোর্ডবাজারেও গার্মেন্টস, প্যাকেজিং এবং প্রিন্টিং ফ্যাক্টরি গড়ি।
1
২০০২ সালে উল্লেখযোগ্য গার্মেন্টস রপ্তানী করে সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করি। স্বপনের বিশেষ অনুরোধের এবং তার বেকারত্বের কথা ভেবে ২০০৩ সালে নাজিয়া ফ্যাশন লি: এ তাকে ম্যানেজার পদে নিয়োগ প্রদান করি । নিয়োগ প্রদানের পর থেকে সে আমার অনুপস্থিতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। গার্মেন্টস এর সব সেক্টর থেকে কমিশন বানিজ্য শুরু করে। অথচ কেউ তার বিরুদ্ধে টু শব্দ করার সাহস পায়না। কারন আমি চেয়েছিলাম পিতা মাতা বিহীন এই ছেলেটিকে সুপ্রতিষ্টিত করতে। তার আপন মামা সিকিউরিটি গার্ড হিসাবে ছিল। তাকে সে প্রায়ই চাকরি থেকে বরখাস্ত করত। তার বোন শিল্পী, ভাগিনী কাজল এবং ভাগনা মুছা আমার বাসায় টুকটাক কাজকর্ম দেখাশুনা করত। সে তাদেরকে কোন পরিচয় দিত না বরং তাদের বের করার জন্য অনুরোধ করত। ২০০৬- ২০০৭ সালে গাইবান্ধা সদর আসনে এমপি প্রার্থী হিসাবে আমি গাইবান্ধায় থাকতাম একাধারে ১৫-২০ দিন । সেই সুযোগ টাকে কাজে লাগিয়ে সে বনানী এয়ারপোর্ট রোড এ অবস্থিত গার্মেন্টস থেকে বিপুল পরিমান ফেব্রিক্স চুরি করে বিক্রি করে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ছিল ২ (দুই) কোটি টাকা। তারিখ ০৪/০৯/২০০৭ইং। তার বিরুদ্ধে মামলা হয় যার মামলা নং- ২১৮৬০৭। ১৩/১২/২০০৭ইং ।
০১/০১/২০০৮ ইং গুলশান থানা পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন এবং সে চুরি করেছে তা উল্লেখ করে ।
এর পূর্বেও সে একাধিকবার চুরি করে এবং জরিমানা ও মাফ চেয়ে ক্ষমা পায়। সে বায়ারদের সাথেও নানাভাবে প্রতারনা করে অনেককেই দেউলিয়া করেছে। আমি বায়ারদের সাথে তার পরিচয় করিয়ে নিবিড়ভাবে যোগাযোগের জন্য বায়ারদেরকে অনুরোধ করলে বায়াররা তার সাথে যোগাযোগ করে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সে বায়ারদেরকে অন্য কারখানাই কাজ দেওয়ার জন্য Motivate করে। ফলে তার কথায় বায়াররা নারায়নগঞ্জের বিভিন্ন কারখানায় এলসি দিতে থাকে। সে এমন কারখানায় এলসি স্থাপন করতে বলে সেখান থেকে আদৌ মালামাল রপ্তানী হবে না। শুধুমাত্র ক্যাশ করার জন্য কারখানাগুলো অনুরুপ কাজ করত। এই সুযোগে সে উচ্চহারে কমিশনের মাধ্যমে রাতারাতি কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়ে যায়। গার্মেন্টস এর মালামাল চুরির টাকা এবং বায়ারদের এলসির কমিশনের টাকা একত্র করে সে গুলশানে একটি ফ্লাট ক্রয় করে। ইতিমধ্যে তার নাম পরিবর্তন করে মাসরুর মাওলা এবং পিতার নাম মারগুব মাওলা করে। সে তার প্রয়োজনে পিতা-মাতার নাম পরিবর্তন সহ ঠিকানা পরিবর্তন করে। মানুষের সাথে প্রতারনা চালিয়ে যাচ্ছে। তার উপর প্রতারনার কৌশল, সে গাইবান্ধায় জমি বিক্রয়ের সময় নিজের নাম স্বপন মিয়া এবং পিতার নাম মাইদুল ইসলাম উল্লেখ করে (কপি সংযুক্ত)।
ঢাকার জমি বিক্রয় করার সময় নিজের নাম মাসরুর মাওলা পিতার নাম মারগুব মাওলা উল্লেখ করে, আবার কোন সময় নিজের নাম মাসরুর মাওলা ওরফে স্বপন এবং পিতার নাম আব্দুল সামাদ ওরফে মারগুব মাওলা উল্লেখ করে। অর্থ্যাৎ তার জন্মদাতা পিতার নামের প্রথম অংশ আবুল মাসুদ এবং পরবর্তীতে বানানো পিতার নামের প্রথম অংশ মারগুব মাওলা একত্রে আবুল মাসুদ ওরফে মারগুব মাওলা ব্যবহার করে, মানুষকে প্রতারিত করে চলেছে (প্রমান সংযুক্ত)।আমাকে বলেছে সোলাইমান আলম শেঠ চিটাগং এর একজন ভাল ব্যবসায়ী, তাকে আমার বাবা অর্থ্যাৎ মজনু ওরফে মারগুব মাওলা ব্যবসার জন্য কয়েকশ কোটি টাকা দিয়েছে। তাছাড়া আমাদের প্রায় ৩০০ বিঘা জমি সে দেখাশুনা করে। “আর আমার ব্যক্তিগত ধারনা তুমি সোলাইমান আলম শেটকে ব্যবহার করে পাওয়ার ও দাপট প্রয়োগ করো নিজেকে অ্যাম্বাসেডর পরিচয় দাও এবং জাতীয় পার্টিতে বড় পদে অধিষ্টিত হয়েছো”।
সারাংশ:
১। মাসরুর মাওলা একজন প্রতারক, লম্পট, চরিত্রহীন, মিথ্যাবাদী এবং তোষামদকারী। তার প্রকৃত নাম স্বপন মিয়া । তার প্রকৃত পিতার নাম আবুল মাসুদ ওরফে মাইদুল ইসলাম। কিন্তু সে অন্য ব্যক্তিকে অর্থাৎ মারগুব মাওলাকে তার পিতা হিসাবে অভিহিত করে।
২। ২। সে একজন অকৃতজ্ঞ। যে তাকে কোন ব্যাপারে সহযোগিতা করে সে তার বিরুদ্ধে অপতৎপরতা এবং বিদ্বেষ ছড়ায়।
অতএব, প্রতিকার তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করে যথাযথ প্রতিকার পাওয়া যেতে পারে।'
