নাটকীয় জয়ে সমতায় ভারত

নাটকীয় জয়ে সমতায় ভারত

ঢাকা মর্নিং ডেস্ক: নিশ্চিত ম্যাচ হারলেই খলনায়কে পরিণত হতেন মোহাম্মদ সিরাজ। ওভাল টেস্টের চতুর্থ দিনে হ্যারি ব্রুকের ক্যাচ হাতে জমিয়েও ছক্কা বানিয়ে দলকে বিপদে ফেলেন তিনি। তবে আজ সোমবার প্রথম প্রহরে গ্যাস অ্যাটকিনসনের স্ট্যাম্প উড়িয়ে ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই নায়কে পরিণত হলেন সিরাজ। ভারতকে ৬ রানে জিতিয়ে অ্যান্ডারসন–টেন্ডুলকার সিরিজ ২-২ ব্যবধানে ড্র করতে বড় ভূমিকা রাখেন ভারতের এই তারকা পেসার। 

শেষ দিনে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৩৫ রান, ভারতের ৪ উইকেট। ওভালে দিনের ১০ ওভারে অ্যাটকিনসনকে বোল্ড করে ইংল্যান্ডকে ৩৬৭ রানে অলআউট করে দিলেন সিরাজ। একই সঙ্গে দুই ইনিংস মিলিয়ে ঝুলিতে ভরলেন ৯টি উইকেট। সিরিজে তার উইকেট সংখ্যা ২৩। 

৩৭৪ রানের লক্ষ্যের বিপরীতে ইংলিশদের লড়াই ছাপিয়ে সবার নজর ছিল ক্রিস ওকসের ওপর। ভারতের বোলিং তোপ এতটাই মারাত্মক ছিল যে চোটগ্রস্ত ওকসকেও এক হাতে খেলতে নামতে বাধ্য করে। ৯ উইকেট পতনের পর ওকস দলের প্রয়োজনে আহত অবস্থাতেও স্লিংয়ে ঝুলিয়ে রাখা বাঁহাত সোয়েটারের ভেতরে ঢেকে মাঠে নেমেছিলেন। অ্যাটকিনসন তারপরেও লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। ওভারের শেষ দিকে এসে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক ধরে রেখে ইংলিশদের মাঝে আশার সঞ্চার করছিলেন। কিন্তু সিরাজের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ে ৮৫.১ ওভারেই কাটা পড়েন অ্যাটকিনসন। আগ্রাসী হওয়ার চেষ্টা ও তাতে সফল হচ্ছিলেন বলে দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে তাকে বোল্ড করেন সিরাজ। তাতেই মেলে ৬ রানের নাটকীয় এক জয়। 

দিনের শুরুর ওভারেই প্রসিদ্ধ কৃষ্ণকে দুটি চার মেরে ইতিবাচক লড়াইয়ের ইঙ্গিত দেন আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটার ওভারটন। কিন্তু পরের ওভারের তৃতীয় বলে জেমি স্মিথকে (২) ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেন সিরাজ। এক ওভার বিরতি দিয়ে সিরাজ ওভারটনকেও (৯) তুলে নিলে ম্যাচটা পুরোপুরি ভারতের দিকে হেলে পড়ে। অ্যাটকিনসন তারপর লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু অপরপ্রান্ত পুরোপুরি অরক্ষিত করে ছাড়ে ভারত। নতুন নামা জশ টাংকে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ দ্রুত সময়ে বোল্ড করলে ইংলিশদের ৯ উইকেটের পতনে ভারতের জয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু অ্যাটকিনসন ছক্কা মেরে ব্যবধান কমিয়ে ভারতীয়দের মনে ভয় ছড়াচ্ছিলেন। ক্রিস ওকস শুধু সিঙ্গেল নেওয়ার জন্য প্রান্ত বদলের কাজটুকু করছিলেন। তারপরেও শেষ রক্ষা হয়নি ইংলিশদের। 

ম্যাচ শেষে জয়ের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে সিরাজ বলেন, ‘আমি দারুণ অনুভব করছি, কারণ আমরা প্রথম দিন থেকেই লড়াই করেছি। পরিকল্পনা ছিল নির্দিষ্ট এলাকায় ধারাবাহিকভাবে বল করে চাপ সৃষ্টি করা। এরপর যা কিছু হয়েছে, সবই বাড়তি প্রাপ্তি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ (সোমবার) সকালে ঘুম থেকে উঠে মনে হয়েছিল, ‘হ্যাঁ, আমি পারব। গুগল থেকে ‘বিশ্বাস’ লেখা একটি ছবি ডাউনলোড করেছিলাম। মনে হচ্ছিল, ব্রুকের ক্যাচটা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। ওটা যদি ধরা না হতো, তাহলে হয়তো মাঠেই নামতে পারতাম না। কিন্তু ও যেভাবে আক্রমণ করল, তাকে কৃতজ্ঞতা জানাতেই হয়। লর্ডসের হার ছিল হৃদয়বিদারক। তখন জাড্ডু ভাই আমাকে বলেছিলেন, নিজের রক্ষণে বিশ্বাস রাখ, আর বাবার কথা মনে করে খেল।’